Birendra Krishna Bhadra | মহাভারতের কথা | Mahabharat | বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র | Mahabharater Katha
মহাভারতের কথা (MAHABHARATER KATHA)
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (BIRENDRA KRISHNA BHADRA)
It is a another unique masterpiece of Birendra Krishna Bhadra.
এটি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের আরও একটি অনন্য অবদান ।
মহালয়ার পুণ্য প্রভাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে 'মহিষাসুরমর্দিনী'-র চন্ডীপাঠ সমস্ত প্রকৃতিতে ধ্বনিত হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এ এক কালজয়ী শিল্প সৃষ্টিকর্ম। ১৯৩২ সালে ষষ্ঠীর ভোরে প্রথমবার সম্প্রচার হয় এই 'মহিষাসুরমর্দিনী'। এরপর শুধুমাত্র ১৯৭৬ সাল বাদে আজও একই ধারায় আকাশবাণীতে অমর হয়ে রয়েছে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়ার অনুষ্ঠান। শুধু এই মহিষাসুরমর্দিনী নয়, রেডিওতে প্রথম ধারাবিবরণীও তাঁরই করা। ১৯৪১ সালে ৭-ই আগস্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ যাত্রার ধারাবিবরণী এবং পরবর্তীতে তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়, ডা. বিধানচন্দ্র রায়, হেমন্ত বসু, মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণযাত্রার ধারাবিবরণীও তাঁরই দেওয়া। এমনকি ক্রিকেট, ফুটবলের ধারাবিবরণীও প্রথম তিনিই দিয়েছিলেন। এছাড়াও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র বিরূপাক্ষ, বিষ্ণুশর্মা, বাঞ্ছারাম, মেঘদূত, অরূপ, বই-বাহিক, মহাকালী চট্টোপাধ্যায় এই সাতটি ছদ্মনামে রেডিওতে একের পর এক অনুষ্ঠান করে গেছেন। এককথায় তিনি আকাশবাণীর একজন জন্মদাতা। আকাশবাণীতে তাঁর সৃষ্টি বহু শিল্পকীর্তিই আজ হারিয়ে গিয়েছে। এমনই আর এক অনন্য শিল্পকীর্তির নিদর্শন আজ আপনাদের কাছে তুলে ধরছি যা বহু মানুষের কাছেই হয়ত আজ অজানা.....
আনুমানিক ১৯৬৯ সাল নাগাদ আকাশবাণীতে "মজদুরমন্ডলীর আসর" বলে একটি অনুষ্ঠান প্রতি বুধবার করে সম্প্রচার করা হতো এবং ঐ অনুষ্ঠানে মধ্যে ১০ মিনিটের জন্য মহাভারতের কাহিনী শোনাতেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র মহাশয়। এই অনুষ্ঠানটির একজন নিয়মিত শ্রোতা ছিলেন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা, আমার পিতৃদেব, শ্রী প্রশান্ত কুমার মল্লিক (PRASANTA KUMAR MALLIK)। প্রতি বুধবার নিয়মিত শুনতেন তিনি এবং দিনের দিন আরও বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ মহাশয়ের কণ্ঠে মহাভারতের কথা শুনে। যেমন কণ্ঠ তেমন অপূর্ব বলার ভঙ্গিমা। আমার পিতৃদেব তখনই সিদ্ধান্ত নেন এইসব অমূল্য রত্নসমুহকে সংরক্ষণ করতে হবে। তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম বই না পড়লেও শুধু এই গল্প শুনে মহাভারত জানতে পারবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই সময় তাঁর কাছে রেকর্ডিং করার মতো কোনোকিছুই ছিল না। কিন্তু সিদ্ধান্তটা এতটাই প্রখর ছিল যে দেরীতে হলেও ১৯৭৩ সালে একটি পুরনো স্পুল টেপরেকর্ডার কিনে তাতে একের পর এক এই মহাভারতের কথা রেকর্ডিং করা শুরু করেন তিনি। সেই সময়ে লোডশেডিং এর প্রকোপ ছিল খুব বেশী। তাই অনেক এপিসোড বাদও গিয়েছে। গল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য, তিনি কিছু এপিসোড লোডশেডিংএর দিনে নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলেও, পরিবারের অন্য কাউকে দিয়ে সেদিনের গল্পটি শুনিয়ে রাখতেন এবং পরে অবসর সময় তাকে দিয়ে গল্পের সারাংশটা রেকর্ডিং করে নিতেন। তাও সেরকম পর্বের সংখ্যা খুব বেশী নয়, কারণ সব লোডশেডিংয়ের দিনে রেডিও থেকে শুনিয়ে রাখাও সম্ভব হতো না। এইভাবে রেকর্ডিং পর্ব চলেছে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। কালের নিয়মে আর দীর্ঘ অব্যবহারের ফলে ঐ স্পুল টেপরেকর্ডারটি প্রায় নষ্টই হয়ে গিয়েছিল। তখন আমি, শ্রী হিমাদ্রি ভূষণ মল্লিক (HIMADRI BHUSAN MALLIK) উদ্যোগ নিই আমার পিতার সংগ্রহ করা ঐ মহা সম্পদগুলি উদ্ধারকার্যে। নিজেই সারিয়ে তুলি টেপরেকর্ডারটিকে। দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে আমার পিতৃদেবের আশীর্বাদ ও সহযোগিতায়, অক্লান্ত পরিশ্রমে উদ্ধার করি সেগুলিকে। তবে কয়েকটি টেপ একেবারেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বেশ কিছু এপিসোড আর উদ্ধার করা সম্ভব হযনি। ইউটিউবে আমি "Old Gold 72" নামে এই চ্যানেলটিতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র মহাশয়ের এই অমূল্য অবদানকে একের পর এক তুলে ধরার চেষ্টা করছি, যা বহু মানুষের কাছেই আজ অজানা। এটি একটি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র মহাশয়ের অনন্য শিল্পকীর্তির নিদর্শন।
(যে এপিসোডগুলিতে বীরেন্দ্রবাবুর কণ্ঠ নেই, যিনি ছোট করে গল্পটি বলে দিয়েছিলেন তাঁর নামও উল্লেখ থাকবে সেই ভিডিওটিতে। কেবল গল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্যই এটি করা হয়েছিল)
Khub valo laglo